1. eshtiakahmed2009@gmail.com : Eshtiak Ahmed Mahraz : Eshtiak Ahmed Mahraz
  2. mkmonir114@gmail.com : Mk Monir : Mk Monir
ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে দুই ভাইয়ের অপকর্ম, ভোল পাল্টান ৫ আগস্ট - চট্টগ্রাম বুলেটিন
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ১২:৩৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
মানবিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিশারি মিডিয়া সেল ও ব্লাড বন্ডের যাত্রা শুরু শুধু চাকরী কোন জাতিকে এগিয়ে নিতে পারেনা: আনোয়ার ছিদ্দীক চৌধুরী কম বয়সী তরুণ চালাচ্ছিল প্রাইভেটকার, ধাক্কায় আরেক তরুণের মৃত্যু সীতাকুণ্ডে নুনাছরা তাওহীদ পাঠাগারের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা ক্যাম্প পটিয়ায় কচুয়াই ফাউন্ডেশনের অভিষেক সম্পন্ন সীতাকুণ্ডে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাইসাইকেল আরোহী নিহত সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কোরবানীর বর্জ্যমুক্ত হলো নগরে যে কারণে ব্যাপক জনপ্রিয় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী চট্টগ্রামে ঈদের প্রধান জামাত জমিয়তুল ফালাহয় অনুষ্ঠিত সীতাকুণ্ডে বিএনপি-জামায়াত নেতারা কে কোথায় ঈদ করছেন?

ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে দুই ভাইয়ের অপকর্ম, ভোল পাল্টান ৫ আগস্ট

বুলেটিন ডেস্ক:
  • আপডেট: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫
  • ৫২৭

ছোট ভাই উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। বড় ভাইয়েরও আছে ইউপি চেয়ারম্যান, ইউজেলা চেয়ারম্যানসহ যুবলীগ নেতাদের সাথে ভালো সখ্যতা। বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে জন্মদিন পারিবারিক সব অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতাদের ভর পেট খাইয়ে ফটোসেশান করে ফেসবুকে দিতেন তারা। বাবা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের দালালি করতেন। পরে বড় ছেলেকেও যুক্ত করেন। একসময় কর্মকর্তার সাথে ভালো সম্পর্কের সুবাদে কম্পিউটার নিয়ে বসে যান টেবিলে। এরপর পোড়া সনের নামজারি, জালিয়াতি করে অন্যের সম্পত্তি নামজারি করিয়ে নেওয়ার বহু অভিযোগ ওঠেছে এই বাপ-ছেলের বিরুদ্ধে। তবে আওয়ামী লীগের ঘরের লোক এই দুই ভাই এখন ভোল পাল্টে নিজেদেরকে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী দাবি করা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে তারা বিএনপি নেতাদের সাথে ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতেও সক্ষম হয়েছে। আর সেটাকে পুঁজি করে একের পর এক অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তারা।

এরা হলেন, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুরের বোয়ালিয়াকুল এলাকার মো. রফিকের ছেলে মো. আমজাদ হোসেন ও কামরুল হোসেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ,  গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় প্রতিবেশী নূর মোহাম্মদকে মারধর করে কুমিরা বাজারের একটি মার্কেটে বেঁধে রাখেন। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করতে সেই যাত্রায় রক্ষা পান তিনি। তার আগে তাকে ৫ আগস্ট মারধর করে তার দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। দোকানে ছাত্রদল এখন ওই ব্যবসায়ী ছন্নছাড়া হয়ে ঘুরছে। তাকে কয়েকটি রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ এসেছে।

ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ জানান, তিনি একাধিক মামলা করলেও কোন প্রতিকার মিলছে না। কামরুলের ক্ষমতার কাছে তিনি অসহায়। তিনি মামলার পাশাপাশি ডিআইজি কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। যেসব কর্মকর্তা তার মামলার আয়ু তারাই তাকে গ্রেপ্তার করতে উদ্যত হন। তিনি জানান, কামরুল হোসেন টাকার পাহাড় করে সেসব টাকা ছিটাচ্ছে। কোনভাবেই পেরে ওঠতে পারছিনা। কামরুল ও আমজাদ হোসেন দুই ভাইই সাবেক ভোটচোর উপজেলা চেয়ারম্যান রাজু চৌধুরীর আস্থাভাজন ছিলেন। তাদের বিয়েতে রাজুসহ বহু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী অংশ নেন। এছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্য সবই ছিলো আওয়ামী লীগের সাথে।

চট্টগ্রামের ডিআইজি বরাবরে দেওয়া অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, দুই ভাই কামরুল হোসেন, আমজাদ হোসেন ও তাদের বাবা রফিক নির্যাতন করছে তার উপর। তিনি কোন রাজনীতি না করলেও তাকে আওয়ামী লীগ বানানো হয়েছে। ২০১২ সালে আমার ২ শতাংশ ৫০ পয়েন্ট জমি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠে কামরুল। ভূমি অফিসে কাজ করার সুবাধে আমাকে হুমকি দিতে থাকে। আমি চেয়ারম্যানের কাছে যাই বিষয়টির সমাধানের জন্য। ওইসময় আওয়ামী লীগের লোকজন মানুষের সেবা করছে বুঝাতে আমাকে ছবি তুলে। তারা সেই ছবি দেখিয়ে এখন আমাকে মারছে, ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছে। ২০১২ সাল থেকে একটি মামলা চলমান। গত বছরের ১৪ নভেম্বর আমাকে নিজ বাড়িতে ও ১৮ ডিসেম্বর কুমিরা বাজারে অতর্কিত হামলা করে মারধর করলে আমি গত ৭ জানুয়ারি আরও একটি মামলা করি। সেই মামলার তদন্তে যিনি সেই পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উল্টো হয়রানি করে। কামরুলের কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে আমাকে গ্রেপ্তার করতে চাই। শুধু তাই নয় গত ১৬ মার্চ আমার ভাই ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজনা দিতে গেলে তাকে মারধর করা হয়। থানায় পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, তিনি বর্তমানে দোকান ছাড়া, বাড়ি ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

তিনি আরও বলেন, থানায় মামলা, জিডি ছাড়াও একাধিক অভিযোগ করেছি। এসবের একটি গত বছরের ২ ফেব্রুয়ারি ও অপরটি ১৮ আগস্ট সীতাকুণ্ড থানায় দেওয়া। এছাড়াও মোট ৪টি অভিযোগ দাখিল করেছেন নুর মোহাম্মদ। ১৮ আগস্টের অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ৫ আগস্ট তাকে মারধর করা হয় এবং তার রুটি রুজির উৎস ক্ষুদ্র দোকানটি বন্ধ করে দেয়। বাড়িতে গিয়ে কামরুল ও তার ভাই আমজাদ হোসেন নুর মোহাম্মদে মাকে বরে দেন সে যেন গ্রামে না থাকে এবং এর আগে করা মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নেয়। অন্যথায় তাকে ও তার চার ভাইকে মেরে গুম করার পাশাপাশি পঙ্গু করে দেবে। এসবের কলরেকর্ড তার কাছে রয়েছে।

 

নুর মোহাম্মদ বলেন, ২০২৩ সালে আমার বাবা বাঁচা মিয়াকে (৬৩) মারধর করে। তিনি জানান, ক্ষমতা ও টাকার কাছে অসহায়। তিনি ইতিমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ দিয়েছেন। পরিবার নিয়ে নিরাপদে বাঁতে তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমোক্তারনামা জাল করে কামরুল তাদের জমি আত্মসাৎ করেছে। বর্তমানে দখলে নিয়ে সেখানে স্থাপনা গড়ে তুলছে।

আকিলপুরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বাসিন্দা বলেন, কামরুল হোসেনের ভাই ছাত্রলীগ নেতা। তারা এক ভাই একদল করবে। এগুলো হলো তাদের ব্যবসা। কোন রাজনীতির আদর্শই তারা ধারণ করে না। কামরুল ইউনিয়নের ছাত্রদলের নেতা গত ১৭ বছরেও শুনিনি। ৫ আগস্টের পর থেকে জানলাম তিনি নাকি ইউনিয়নের নেতা। তার ভাইও নাকি ছাত্রদল।

এর আগে কামরুলের সিল, স্বাক্ষর, নকর দলিল জাল জালিয়াতির বিরুদ্ধে এলাকায় পোস্টারিং করে স্থানীয়রা সবাইকে সতর্ক করে। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে অর্ধ শতাধিক লোক মানববন্ধন করে ভূমি অফিসের সামনে। তাকে ইউনিয়নে ভূমি অফিসের অস্থায়ী কম্পিউটার অপারেটর পদ থেকে সরানোর দাবি করেন তারা। ওইসময় বিভিন্ন গনমাধ্যমে এসব খবর প্রচারতি হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কামরুল ভূমি অফিসে কাজ করে অবৈধ সব ফাইল করতেন। জোরপূর্বক জমি ক্রয় বিক্রয় করে কুড়ে ঘর থেকে এখন দালান গড়ে তুলেছেন। অথচ দৃশ্যমান কোন ব্যবসাই নেই তার।

এ বিষয়ে জানেতে কামরুল হোসেন বলেন, আমি বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সেক্রেটারি। আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমি এসব কাজে জড়িত নেই। নুর মোহাম্মদকে মারধর, দোকানে তালা দিয়েছে কারা তাও আমি জানিনা।

এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কাজী সেলিম বলেন, কামরুল বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। সে ভালো ছেলে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র হতে পারে। এরপরও আপনারা তদন্ত করে দেখেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন:

এই বিষয়ে অন্যান্য সংবাদ