চট্টগ্রাম বুলেটিন

যে কারণে নৌ পরিবহন উপদেষ্টাকে চট্টগ্রামে নামতে দেবেন না চসিক মেয়র

সরকারের নৌ পরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেনকে চট্টগ্রামে নামতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের কর্ণফুলি হলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এসময় মেয়র বলেন, নৌ পরিবহন উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিলেন। সেখানে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক ছিল৷ তারা নিউজ করেছে, ” মেয়র যারাই ছিল তারা সবাই ভক্ষক হয়েছে। তখন এটা আমার গায়েও পড়েছে। আমি ওনাকে (উপদেষ্টা) বললাম আপনি কি এই ধরণের কোন বক্তব্য দিয়েছেন। তাহলে আমি কিন্তু প্রেস কনফারেন্স করব কালকে থেকে এবং আপনি যতক্ষণ না বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট করবেন ততক্ষণ আমি আপনাকে চট্টগ্রামে শহরে আসতে দিব না৷ তিনি বললেন, না আমি বলেছি অতিতের যারা মেয়র ছিল তারা ভক্ষক ছিলো৷ এরপর আমি উপদেষ্টাকে বলেছি আপনি আরও একটি কথা বলেছেন, প্রতিদিন বন্দর থেকে ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়৷ আমিতো হোল্ডিং ট্যাক্স পাচ্ছি না আপনার বন্দর থেকে। আমার ৭-৮ জন টনের ধারণক্ষমতার রাস্তায় ৩০-৪০ টনের গাড়ি চলাচল করছে বন্দরের। আমার সমস্ত রাস্তা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বন্দরের কারণে। ৩০০-৪০০ কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে আমাকে। তাহলে চাঁদাবাজি কারা করছে আপনি সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ তুলে স্পষ্টভাবে বলতে হবে৷ আপনি আমার ন্যার্য দিচ্ছেন না বৎসরে ২০০ কোটি টাকা। আর প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। এর অর্থ কী? তাহলে আপনি হোল্ডিং ট্যাক্স না দিয়ে চাঁদাবাজদের উৎসাহিত করছেন৷ এটা হতে পারে না।

চসিক মেয়র আরও বলেন, চাঁদাবাজি কারা করছে তাদের নাম আপনি বলবেন সুনির্দিষ্ট করে, আমি অন্তত মেয়র হিসেবে নিজে গিয়ে চাঁদাবাজের রুখে দিব।

বছরে চসিকের শিক্ষা খাতে ৭২ কোটি টাকা ভুর্তকী দিতে হয় উল্লেখ করে চসিক মেয়র বলেন, আমরা শিক্ষকদের ভালো মতো বেতন দিতে পারছি না৷ হোল্ডিং ট্যাক্স আমরা নিচ্ছি জনসাধারণকে সেবা দেওয়ার জন্য, রাস্তাঘাট মেরামত করার জন্য, পরিস্কার করার জন্য, কিন্তুু সেটি পারছিনা। অসংখ্য রাস্তাঘাটে খানাখন্দ রয়ে গেছে। আপনি স্পষ্টভাবে বলুন, কারা বন্দরে চাঁদাবাজি করছে তাদেরকে চট্টগ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব৷ চট্টগ্রাম বন্দরকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ন্যার্য্য বুঝিয়ে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, গত সরকারের আমলে চট্টগ্রাম বন্দর যেই ব্যাংকগুলোতে কোটি কোটি টাকা জমা করেছে সেই ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পরও টাকা জমা রাখা হয়েছে। সেই টাকা কারা নিয়েছে, কিভাবে নিয়েছে সেটি চট্টগ্রামবাসী জানতে চায় এবং জবাব দিতে হবে।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনারা এসব অনিয়ম নিয়ে লিখুন। এগুলো চট্টগ্রামের সম্পদ, রাস্ট্রের সম্পদ, আপনার ও আমার সম্পদ। আর আপনাদের জানাতে চাই, বস্তুনিষ্ঠতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যখন কোন ভুল নিউজ করা হয় তখনি সেটি সেই ব্যক্তিকে নয় শুধু সাংবাদিকতাকেও কলুষিত করে৷ সংবাদে বস্তুনিষ্ঠতা সাংবাদিকতাকে উজ্জল করে৷ এসময় তিনি নৌ পরিবহন উপদেষ্টার উদ্দেশ্য বলেন, কোন ধরণের প্রমাণ না থাকলে এ ধরণের কথা বলাও উচিত নয়৷ কাজেই আপনাকে প্রমাণ দিতে হবে কে কিভাবে এই চাঁদাবাজি করছে৷

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি৷ এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, সাংবাদিক ওসমান গণি মুনসুর প্রমুখ৷

Tags :

সর্বশেষ