গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলছেন, ‘এই দেশে বিদেশী আধিপত্যবাদ এখনো চলছে। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব ছিল বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। সরকার মৌলিক সংস্কারকে জায়গা না দিয়ে, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশীদের দেওয়ার জন্য তৎপর। এই সরকার টিকে আছে রাজনৈতিক দলগুলো এবং বিভিন্নক্ষেত্রে যে অংশীজন আছেন তাদের উপর। আলাপ আলোচনা ছাড়া সরকার দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত না।’
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরে গণসংহতি আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণের আয়োজনে ‘নদী খাল পাহাড় সুরক্ষা এবং কর্মসংস্থান বান্ধব নিরাপদ, ইনসাফ ও সম্প্রীতির চট্টগ্রাম গড়তে মাথাল সমাবেশ ও র্যালি’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি, বন্দর এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান যার সাথে জাতীয় নিরাপত্তা জড়িত, কাজেই সিদ্ধান্ত নিতে সকলের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে। তারা আলাপ আলোচনা না করে গোপন চুক্তি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছে- তাই প্রশ্ন উঠছে এখানে আমাদের জাতীয় স্বার্থ হাসিল হচ্ছে কিনা। গোপনে চুক্তি করে যা দিয়েছেন তার জন্য জনগণের দায় থাকবে না৷’
তিনি আরো বলেন, ‘দেশে ধর্ম, জাতি লিঙ্গ ভেদে বৈষম্য করা হয়,বৈষম্য দূর করে মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা আমাদের লক্ষ্য। ফ্যাসিবাদ যে ঘৃণার রাজনীতি করতো, সেই ঘৃণার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।’
নির্বাচন প্রসঙ্গ জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে নতুন গণতান্ত্রিক যাত্রা যেন সফল হয়, তার জন্য আমরা সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে চেষ্টা করি। রাজনৈতিক অধিকার আমাদের দরকার, কেননা রাজনৈতিক অধিকার ছাড়া আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা, দাবিদাওয়া স্বাধীনতা, প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে না।’
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ও চট্টগ্রাম ৯ আসনের প্রার্থী হাসান মারুফ রুমী বলেন, দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের পরে বাংলাদেশের মানুষ ৫ আগস্ট বাংলাদেশকে শেখ হাসিনার কতৃত্ব থেকে মুক্ত করেছিল। মানুষের স্বপ্ন ছিল, মানুষ ন্যয্য মজুরি পাবে, মানুষ জীবন পাবে নিরাপত্তা পাবে, শিক্ষা চিকিৎসা পাবে,কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে সকল অধিকার ভুলন্ঠিত হয়েছে।
তফশিলের দাবি করে রুমী বলেন,
আশাকরি এই সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন তফশিল ঘোষণা হবে। এই অঞ্চলের মানুষের উপর গডফাদার আ জ ম নাছিরের বসানো টেক্সের বোঝা এখনো কমেনি, আমরা সংসদে গেলে গলাকাটা হোল্ডিং টেক্স বাতিল করে আইন প্রনয়ণ করবো। চট্টগ্রামের বন্দর এই অঞ্চলের লাইফলাইন, চট্টগ্রামের চাকরিতে এই অঞ্চলের মানুষ কম, অথচ চট্টগ্রামের মানুষের জায়গার উপর বিমানবন্দর, নৌ বন্দর হয়েছে, তাদের কর্মসংস্থান নাই। উন্নয়নের ফল পায়নি।
চট্টগ্রাম নগরীতে সিডিএ’র মাস্টারপ্ল্যান বিষয়ে হাসান মারুফ রুমী বলেন, চট্টগ্রামে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়েছিল, ইংরেজি কিতাববদ্ধ হয়ে পড়েছিল।
নতুন মাস্টারপ্ল্যানে চট্টগ্রামের মানুষকে যুক্ত করতে হবে। ইংরেজিতে কিতাব লিখবেন, এসি ঘরে বসে ভাগ্য লিখবেন সেটা হতে দিব না৷। আপনারা উন্নয়ন করবেন, সাথেসাথে শিক্ষা চিকিৎসা চট্টগ্রামের মানুষের ভাগ্য বাদ দিয়ে হতে দিব না।
সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার ৬টি আসনের প্রার্থীরা বক্তব্য দেন৷ সমাবেশ শেষে নগরীর কাজির দেউড়ি মোড় থেকে আন্দরকিল্লা পর্যন্ত মাথাল মিছিল হয়।